ঢাকা, বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

৩.৬ কেজি আফিম উদ্ধারসহ মাদক কারবারী হ্লামং মারমা র‌্যাব-১৫ কর্তৃক গ্রেফতার

নিউজ ডেস্ক

 প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৪, ০৭:১৫ বিকাল  

ছবি সংগৃহীত

দূর্লভ মাদক আফিম পাচারকালে বান্দরবানের লামা থানাধীন ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ইয়াংছা ছোটপাড়া এলাকা থেকে তিন কোটি ষাট লক্ষ টাকা মূল্যমানের ৩.৬ কেজি আফিম উদ্ধারসহ মাদক কারবারী হ্লামং মারমা র‌্যাব-১৫ কর্তৃক গ্রেফতার
 
র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়নের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বাংলাদেশে অপরাধ নির্মূলে প্রতিনিয়ত অবদান রেখে চলেছে। ‘‘বাংলাদেশ আমার অহংকার’’ এই স্লোগান নিয়ে র‌্যাব-১৫, কক্সবাজার এর দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণ, জঙ্গী দমন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, জলদস্যু, ডাকাত, চুরি-ছিনতাই, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও মাদকসহ দেশে বিরাজমান নানাবিধ অপরাধ নির্মূলে বিশেষ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। এ সকল অপরাধ দমনে প্রতিনিয়ত অত্যন্ত অগ্রণী ভূমিকা পালন এবং অপারেশনাল কার্যক্রম পরিচালনাসহ আন্তরিকতার সহিত নিরলসভাবে কাজ করছে।
 
সম্প্রতি পার্বত্য জেলাগুলো বিশেষ করে বান্দরবান জেলার দূর্গম পাহাড়ী এলাকাসমূহে মাদকদ্রব্য ক্রয়-বিক্রয় বৃদ্ধিসহ মাদক কারবারীরা প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন কৌশলী পন্থা অবলম্বনের মাধ্যমে চোরাইপথে আফিমসহ অন্যান্য মাদক পাচার করে আসছে। মাদকের ভয়াল থাবা থেকে দেশের যুব সমাজকে রক্ষা ও দেশব্যাপী মাদকদ্রব্যের বিস্তাররোধে ‘চলো যাই যুদ্ধে মাদকের বিরুদ্ধে’ এই স্লোগান উজ্জ্বীবিত হয়ে র‌্যাব-১৫, কক্সবাজার কর্তৃক প্রতিনিয়ত মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা অব্যাহত রয়েছে।
 
বিগত ২০২৩ সালে র‌্যাব-১৫ কর্তৃক বিভিন্ন সময়ে পরিচালিত অভিযানের মাধ্যমে অন্যান্য মাদকের পাশাপাশি সর্বমোট ১৪.৮৪৫ কেজি আফিম উদ্ধার করা হয়। এছাড়া ঘটনার সাথে জড়িত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে। আফিম দূর্লভ ও দামী মাদক, যা অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল ও উচ্চ বিলাসী মাদক সেবীদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয়। দেশের যুব সমাজকে মাদকের ভয়াল থাবা থেকে মুক্ত রাখতে র‌্যাব-১৫ সর্বদা বদ্ধ পরিকর।
 
May be an image of text
 
এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সূত্রে র‌্যাব-১৫ জানতে পারে যে, বান্দরবান পার্বত্য জেলার লামা থানাধীন ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডস্থ ইয়াংছা ছোটপাড়া এলাকার জনৈক এক মাদক কারবারীর বসতঘরে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য তথা আফিম বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে মজুদ রয়েছে। নির্ভরযোগ্য গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখ অনুমান ২১.০০ ঘটিকার সময় র‌্যাব-১৫, কক্সবাজার এর সিপিএসসি ক্যাম্পের একটি চৌকস আভিযানিক দল বর্ণিত এলাকার জনৈক হ্লামং মারমার বসত ঘরের সামনে উপস্থিত হলে র‌্যাবের আভিযানিক দলের উপস্থিতি বুঝতে পেরে পালায়নের চেষ্টাকালে কুখ্যাত মাদক কারবারী হ্লামং মারমা (৩৮), পিতা-মংচাই মারমা, সাং-ইয়াংছা ছোটপাড়া, ৯নং ওয়ার্ড, ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন, থানা-লামা, জেলা-বান্দরবান’কে আটক করা হয়। গ্রেফতারকৃত মাদক কারবারীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার নাম-ঠিকানা প্রকাশ করে এবং তার বসত ঘরের শয়ন কক্ষের খাটের নিচে বিশেষ কায়দায় বাজারের ব্যাগের ভিতর বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে মাদকদ্রব্য আফিম মজুদ রয়েছে বলে স্বীকার করে। পরবর্তীতে উপস্থিত স্বাক্ষীদের সম্মুখে বিধি মোতাবেক গ্রেফতারকৃত হ্লামং মারমার বসত ঘর তল্লাশী করে সর্বমোট ০৩ কেজি ৬০০ গ্রাম আফিম উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত অবৈধ আফিম এর আনুমানিক মূল্য প্রায় তিন কোটি ষাট লক্ষ টাকা।
 
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান যে, বান্দরবানের গহীন পাহাড় বিশেষ করে সীমান্ত এলাকায় একটি সিন্ডিকেট রয়েছে, যারা এই আফিম চাষ করাসহ প্রক্রিয়াজাত করে থাকে। এরপর তারা সেগুলো শহরে নিয়ে আসে; পরে সুযোগ বুঝে বিভিন্ন যাত্রীবাহী পরিবহনে যাত্রী সেজে, অভিনব কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে এবং কখনো কখনো আফিম চালানের ক্যারিয়ারদের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই আফিম ছড়িয়ে দেয়া হয় বলে জানায়।
 
গ্রেফতারকৃত হ্লামং মারমা একজন চিহ্নিত মাদক কারবারী। সে পার্বত্য জেলা বান্দরবান ও কক্সবাজার কেন্দ্রিক আফিম ক্রয়-বিক্রয় এবং দীর্ঘ দিন যাবৎ মাদক চোরাচালানের সাথে জড়িত। সে বান্দরবানের পাহাড়ী মাদক সিন্ডিকেটের সাথে সার্বিক সমন্বয় করে দূর্গম পাহাড়ী অঞ্চল এবং ক্ষেত্র বিশেষ পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে আফিম নিয়ে আসতো। অতঃপর অবৈধ পথে পাচারকৃত মাদক নিজের হেফাজতে বসতঘরে মজুদসহ বিভিন্ন স্থানে অভিনব কৌশলে লুকিয়ে রাখতো। পরবর্তীতে আফিমসহ অন্যান্য মাদকের চালান ভাগ ভাগ করে বড় অংকের টাকার বিনিময়ে পর্যায়ক্রমে বান্দরবানসহ পাশ্ববর্তী জেলা কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে এবং চাহিদা অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নির্ধারিত মাদক কারবারী এজেন্টদের নিকট পাচার করে থাকে। এক্ষেত্রে গ্রেফতারকৃত মাদক চোরাকারবারী প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিতে বিভিন্ন কৌশলী পন্থায় ব্যাগের ভিতরে সু-কৌশলে লুকিয়ে মাদকের এজেন্টদের গন্তব্যের পৌঁছে দিতে বলে জানা যায়।
 
গ্রেফতারকৃত মাদক কারবারীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।