ঢাকা, সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি যুদ্ধ

ইসরায়েল-হামাস চুক্তি : এবার সিআইএ প্রধানকে পাঠাচ্ছেন বাইডেন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

 প্রকাশিত: জানুয়ারী ২৭, ২০২৪, ১১:৫৫ দুপুর  

ছবি সংগৃহীত

গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের কব্জায় থাকা অবশিষ্ট জিম্মিদের উদ্ধারে ইসরায়েল এবং হামাসের মধ্যে একটি চুক্তি সম্পাদনে মধ্যস্থতা করার জন্য এবার যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ গোয়েন্দা সংস্থা সিআএ’র প্রধান উইলিয়াম বার্নসকে পাঠাচ্ছেন জো বাইডেন।

বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, আগামী কিছু দিনের মধ্যে ইউরোপে এ ইস্যুতে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের প্রধান ডেভিড বারনিয়া, মিসরের গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান আব্বাস কামেল এবং কাতারের প্রধানমন্ত্রী আবদুলরহমান আল থানি। তবে কবে এবং ইউরোপের কোথায় সেই বৈঠক হবে তা জানাননি মার্কিন কর্মকর্তারা।

শুক্রবার হোয়াইট হাউসে এক ব্রিফিংয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টর জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা জন কিরবিকে সাংবাদিকরা এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বৈঠক। জিম্মিদের মুক্তি সংক্রান্ত চুক্তি নবায়ন এবং গাজায় শান্তি স্থাপন সংক্রান্ত আলোচনা হবে সম্ভাব্য সেখানে।’ এ প্রসঙ্গে বিস্তারিত আর কিছু বলতে চাননি তিনি। হোয়াইট হাউসের অন্যান্য কর্মকর্তারও এ ইস্যুতে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।

ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আলোচনা বা বৈঠক সফল হলে গাজায় ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি পালন করবে ইসরায়েলি বাহিনী ও হামাসের যোদ্ধারা। সেই সঙ্গে ইসরায়েল বিভিন্ন কারাগার থেকে কয়েকশ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেওয়া হবে।

এদিকে ইসরায়েলি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সম্প্রতি জানিয়েছে, সম্প্রতি কাতার এবং ইসরায়েলের সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে গাজা যুদ্ধ নিয়ে টেলিফোনে আলোচনা হয়েছে। সেই আলোচনায় কাতারের কর্মকর্তারা হামাসের পক্ষ থেকে বলেছেন যে ইসরায়েল যদি গাজা থেকে তাদের সেনাবাহিনীকে সম্পূর্ন প্রত্যাহার না করে, তাহলে জিম্মিদের মুক্তি সংক্রান্ত কোনো আলোচনায় যেতে হামাস আগ্রহী নয়। তবে কাতারের তরফ থেকে এখন পর্যন্ত এ প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য বা প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত হামলা চালিয়ে সামরিক-বেসামরিক ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিকসহ ১ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করে হামাস যোদ্ধারা। সেই সঙ্গে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় আরও ২৪০ জন ইসরায়েলি এবং অন্যান্য দেশের নাগরিককে।

১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর গত ৭৫ বছরের ইতিহাসে সেদিন প্রথম একদিনে এতজন মানুষের হত্যা দেখেছে ইসরায়েল। অভূতপূর্ব সেই হামলার জবাবে সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী এবং তার এক সপ্তাহ পর বিমান বাহিনীর সঙ্গে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও।

ইসরায়েলি বাহিনীর লাগাতার বোমাবর্ষণে গত প্রায় সাড়ে চার মাসে গাজায় নিহত হয়েছেন ২৬ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি, আহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার এবং ইসরায়েলি বাহিনীর বোমাবর্ষণে ধসে যাওয়া বিভিন্ন ভবনের ধ্বংস্তূপের নীচে এখন ও চাপা পড়ে আছেন অন্তত কয়েক হাজার মানুষ।

গত ২৫ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঘোষিত এক মানবিক বিরতির সাত দিনে মোট ১০৮ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। বাকি ১৩২ জন এখনও তাদের হাতে আটক রয়েছেন।

হামাস এবং ইসরায়েল যুদ্ধের শুরু থেকে দু’পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতা করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র, মিসর এবং কাতার। ২৫ নভেম্বর-১ ডিসেম্বরের বিরতি ছিল মূলত এই তিন দেশের নিবিড় মধ্যস্থতার ফসল।

সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি