ঢাকা, শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১

বায়তুল মোকাররমে বিক্ষোভ-মিছিল নিষিদ্ধের নির্দেশ

নিউজ ডেস্ক

 প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৪, ১১:৪৮ রাত  

রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদ এলাকায় রাজনৈতিক বিক্ষোভ ও মিছিল নিষিদ্ধে পদক্ষেপ নিতে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এর আগে, বায়তুল মোকাররম মসজিদ এলাকায় রাজনৈতিক মিছিল, বিক্ষোভ অবৈধ করার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করা হয়। এ বিষয়ে আগামী ৯০ দিনের মধ্যে ধর্ম মন্ত্রণালয়, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ডিএমপি কমিশনারকে নিষ্পত্তির জন্য আদেশ দেন হাইকোর্ট।

রিট পিটিশনে উল্লেখ করা হয়, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম ইসলামিক ফাউন্ডেশন নিয়ন্ত্রণাধীন। ১৯৭৫ সালের ২৮ মার্চ থেকে ইসলামিক ফাউন্ডেশন এই মসজিদটিকে রক্ষণাবেক্ষণ করে আসছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশন ধর্ম মন্ত্রণালয় আওতাধীন একটি প্রতিষ্ঠান। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকারমে একত্রে ৪০ হাজার মুসুল্লি একত্রে নামাজ আদায় করতে পারে। নান্দনিক এই মসজিদের অভ্যন্তরে ওজুর ব্যবস্থাসহ পুরুষদের পাশাপাশি মহিলাদের জন্যও পৃথক নামাজ কক্ষ ও পাঠাগার রয়েছে। নিয়মিত ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় ছাড়াও জুম্মা ও ঈদের সময় বাড়তি ৩৯,৮৯৯ বর্গফুটে নামাজ পড়ের ধর্মপ্রাণ মুসুল্লীরা। 

বিগত কয়েক বছর যাবৎ সাধারণ দিনসহ প্রায় প্রতি শুক্রবার জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম এলাকায় জুম্মার নামাজের পরে বিভিন্ন ইসলামিক মৌলবাদী রাজনৈতিক দল ও সংগঠনের ব্যানারে সভা, সমাবেশ, মিছিল, বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। উক্ত সভা, সমাবেশ, মিছিল, বিক্ষোভে অংশগ্রহণের জন্য আগত ব্যক্তিরা নামাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মসজিদের ভিতর থেকেই স্লোগান দিয়ে একযোগে মসজিদ সংলগ্ন সিঁড়ির উপর অবস্থান গ্রহণ করে। এই রকম হুড়োহুড়িতে মসজিদে আগত সাধারণ ধর্ম প্রাণ মুসুল্লিগন আতঙ্কিত বোধ করেন ও নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। ফলে নির্বিঘ্নে নামাজ আদায়ে বাধাগ্রস্থ হন।

সম্প্রতি বিভিন্ন সময় বায়তুল মোকাররম মসজিদের বাইরে বিক্ষোভের সময় বিক্ষোভকারীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে যার ফলে অনেকে আহত নিহত হয়েছে এবং সাধারণ মানুষের সম্পত্তি ধ্বংস হয়েছে। ২৬ মার্চ ২০২১, এরূপ সংঘর্ষে ব্যাপক জানমালের ক্ষতি হয়। আমাদের মহান সংবিধানের ৪১ (১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে আইন, জনশৃঙ্খলা ও নৈতিকতা সাপেক্ষ, (ক) প্রত্যেক নাগরিকের যেকোন ধর্ম অবলম্বন, পালন বা প্রচারের অধিকার রহিয়াছে; (খ) প্রত্যেক ধর্মীয় সম্প্রদায় ও উপ- সম্প্রদায়ের নিজস্ব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের স্থাপন, রক্ষণ ও ব্যবস্থাপনার অধিকার রহিয়াছে"

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে নিয়মিত সংঘর্ষের ফলে সাধারণ ধর্ম প্রাণ মুসুল্লিগন বায়তুল মোকাররম মসজিদে জুম্মার নামাজ সহ নিয়মিত ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে গিয়ে ভয়ে আতঙ্কিত থাকেন। যা আমাদের মহান সংবিধানের ৪১ অনুচ্ছেদ পরিপন্থী। কোন মসজিদ কোন রাজনৈতিক দলের দলীয় কার্যালয় নয়, মুসলিম ধর্মপ্রাণ মানুষদের ইবাদতের স্থান। 

এই সব বিস্তারিত উল্লেখ করে রীটকারী ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ধর্ম মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং পুলিশ কমিশনার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে বায়তুল মোকাররম এবং সংলগ্ন এলাকায় সকল প্রকার বিক্ষোভ, সভা, সমাবেশ, মিছিল নিষিদ্ধ করার আদেশ প্রদানের জন্য একটি আবেদন করেছি। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিপক্ষগন কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় এই রীট পিটিশন দায়ের করা করেছি। কোন মসজিদ কোন রাজনৈতিক দলের দলীয় কার্যালয় নয়, মুসলিম ধর্মপ্রাণ মানুষদের ইবাদতের স্থান। তাই এই রীট পিটিশনে প্রার্থনা করা হয়েছে যে, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম অন্যান্য সকল মসজিদ ও তার সংলগ্ন এলাকায় সকল প্রকার সভা, সমাবেশ, মিছিল, বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করা হোক।