1. admin@bdtribune24.com : admin :
সোমবার, ২০ মার্চ ২০২৩, ০২:৩৯ অপরাহ্ন

সাকিবের হাত ধরে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের হারাল বাংলাদেশ

  • আপডেট সময় : সোমবার, ৬ মার্চ, ২০২৩
  • ৬ বার পঠিত

 

ক্রিড়া প্রতিবেদক :
ম্যাচটা ছিল নিয়মরক্ষার। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সিরিজের প্রথম দুটি ম্যাচই ইংল্যান্ড জেতায় জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের শেষ ম্যাচ নিয়ে তেমন আগ্রহ ছিল না। গ্যালারি ফাঁকা। চট্টগ্রাম নগরেও খেলা নিয়ে নেই কোনো উন্মাদনা। আর এমন দিনেই কিনা বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে দিল বাংলাদেশ! সাকিব আল হাসানের হাত ধরে আসা ৫০ রানের জয়ে আগেই সিরিজ হারা তামিম ইকবালের দল এড়াতে পেরেছে ধবলধোলাই।

বাংলাদেশের জয়ের নায়ক ছিলেন সাকিবই। ব্যাট হাতে তাঁর ৭৫ রানের ইনিংস দলকে পৌঁছে দেয় ২৪৬ রানে। সে রান তাড়ায়ও ইংলিশদের প্রধান বাধা হয়ে ওঠেন সাকিবই। দারুণ ব্যাটিংয়ের পর বল হাতেও ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচটা নিজের করে নেন এই তারকা অলরাউন্ডার।

প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ওয়ানডেতে ৩০০ উইকেট সাকিবের
বাংলাদেশের বোলিং কিংবা জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের উইকেট—যে কারণেই হোক না কেন, রান তাড়ায় ইংল্যান্ড দলের শুরুটা ছিল চেনা ইংল্যান্ডের মতোই। পাওয়ার প্লের প্রথম ৫ ওভারেই ৩৪ রান তুলে ফেলে জেসন রয় ও ফিল সল্ট জুটি। তবে রানের সে গতি তাঁদের ধরে রাখতে দেননি সাকিব ও তাসকিনের পরিবর্তে খেলতে নামা পেসার ইবাদত হোসেন। সাকিবকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সল্ট কাভারে ক্যাচ দেন মাহমুদউল্লাহকে।

পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে ডেভিড ম্যালানও একই ভুল করেন। ইবাদতের বলে মিড অনের ওপর দিয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ তোলেন প্রথম ওয়ানডেতে ইংল্যান্ডের জয়ের নায়ক। পরের ওভারে আরেক ওপেনার রয়কে বোল্ড করেন সাকিব। ওয়াইড অব দ্য ক্রিজ থেকে আসা আন্ডারকাটার না বুঝে বোল্ড হয়েছেন রয়। মাত্র ২ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারায় ইংল্যান্ড।

ব্যাট হাতে দলের সর্বোচ্চ সাকিবেরই

সাকিবের যত কীর্তি

সেখান থেকে অবশ্য ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছিল বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। সাকিবের বাঁহাতি স্পিন সামলানোর জন্য ইংল্যান্ড বাঁহাতি স্যাম কারেনকে পাঁচে নামায়। জেমস ভিন্সের সঙ্গে যোগ করেন ৮১ বলে ৪৯ রান। জুটিটা শেষ পর্যন্ত ভেঙেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তাঁর অফ স্পিনে লং অফে ছক্কা মারতে গিয়ে ক্যাচ দেন কারেন। লম্বা হয়নি ভিন্সের ইনিংসও। দ্বিতীয় স্পেলে সাকিবের দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে ৩৮ রান করে কট বিহাইন্ড হন এই ডানহাতি।

বড় উইকেটটা অবশ্য নিয়েছেন আরেক বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। ৬ উইকেট হারালেও ক্রিস ওকসকে নিয়ে ইংল্যান্ডকে জয়ের পথেই এগিয়ে নিচ্ছিলেন অধিনায়ক জস বাটলার। কিন্তু বাটলারের সে লড়াই চলল ৩৫ ওভার পর্যন্ত। তাইজুলের আর্ম বলে রিভার্স সুইপ করার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়েন ইংল্যান্ড অধিনায়ক। ২৪ বলে ২৬ রান করা বাটলার রিভিউ নিয়েও রক্ষা পাননি। তাইজুল সেখানেই থামলেন না। নিজের শেষ ওভারে ফিরিয়েছেন আদিল রশিদকেও।

ফিফটি পেয়েছেন মুশফিকও

বাংলাদেশ দল ততক্ষণে জয়ের সুবাস পেতে শুরু করেছে। বাকি ছিল শুধু আনুষ্ঠানিকতা, সেটিও সেরেছেন সাকিবই। রেহান আহমেদকে নিজের চতুর্থ শিকার বানিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৩০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন এই বাঁহাতি স্পিনার। তিন ওভার পর মোস্তাফিজুর রহমান ক্রিস ওকসকে ফিরতি ক্যাচে আউট করলে ১৯৬ রানে অলআউট হয়ে যায় ইংল্যান্ড। ব্যাটিংয়ে ৭৫ রান, বল হাতেও সর্বোচ্চ ৪ উইকেট—ম্যাচটা যেন একাই জেতালেন সাকিব!

ইংল্যান্ড সিরিজজুড়েই বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং প্রশ্নবিদ্ধ। সিরিজের প্রথম দুই ওয়ানডেতে বিশেষ করে টপ অর্ডার থেকে বড় কোনো ইনিংসই পাওয়া যায়নি। তৃতীয় ওয়ানডেতেও এর ব্যতিক্রম কিছু হয়নি। ওপেনার লিটন দাস ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো টানা দুই ম্যাচে কোনো রান না করে আউট হয়েছেন। তামিম ফিরে গেছেন ১১ রানে।
আপনার চোখে বাংলাদেশ–ইংল্যান্ড তৃতীয় ওয়ানডের ম্যাচসেরা কে?

রান এসেছে নাজমুলের ব্যাট থেকেও

এমন শুরুর পর আরও একটি ব্যাটিং ধসই প্রত্যাশিত ছিল, সেটি হতে দেননি নাজমুল হোসেন ও মুশফিকুর রহিম। দুজন মিলে তৃতীয় উইকেট জুটিতে ১২৮ বল খেলে যোগ করেন ৯৮ রান। তবে দুজনের ইনিংসের শুরুই হয়েছে মন্থরগতিতে, যা পরেও পুষিয়ে দিতে পারেননি তাঁরা। নাজমুল রান আউট হয়েছেন ৭১ বলে ৫৩ রান করে।

নাজমুলের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি ছিল এটি। থিতু হয়ে আউট হওয়ায় ভুল করেছেন মুশফিকও। ৯৩ বলে ৭০ রান করে তিনি বোল্ড হন আদিল রশিদের গুগলিতে স্লগ সুইপ খেলতে গিয়ে। গত বছর আগস্টে জিম্বাবুয়ে সফরে সর্বশেষ ফিফটি করেছিলেন মুশফিক।

চট্টগ্রামে এসে বাংলাদেশ পেল জয়

ফিফটি এসেছে সাকিবের ব্যাট থেকেও। ক্রিজে এসেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করেছেন তিনি, চাপের মুখে খুঁজে নিয়েছেন বাউন্ডারি। বাংলাদেশের রানটাকে লড়াই করার মতো জায়গায় নিয়ে যান এই তারকা অলরাউন্ডারই। জফরা আর্চারের বলে স্কুপ করতে গিয়ে আউট হওয়ার আগে সাকিবের ব্যাট থেকে এসেছে ৭১ বলে ৭৫ রান। ৭টি চার ছিল সাকিবের ১০৫ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসে।

সাকিব আউট হয়ে যাওয়ায় আর পুরো ৫০ ওভার খেলা হয়নি বাংলাদেশের।ইনিংস থেমে গেছে ৪৮.৫ ওভারেই। এর আগের দুই ম্যাচেও পুরো ৫০ ওভার ব্যাটিং করেনি বাংলাদেশ। ২০০৮ সালের পর এই প্রথম ঘরের মাঠে কোনো দ্বিপক্ষীয় সিরিজের তিন ম্যাচেই অলআউট হলো বাংলাদেশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা

© All rights reserved © 2022 BD Tribune 24
Theme Customized By Shakil IT Park